নির্বাচনী প্রচারণায় ভোলার রাজনীতি জমজমাট
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলার চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনীতির মাঠ জমজমাট হয়েছে। ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র দুইজনসহ মোট ১৬ জন প্রার্থী প্রচরণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার মাঠ গাঠ, হাটবাজার জুরে।
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থীদের তৎপরতা ততই বাড়ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এছাড়া গানের তালে—তালেও ভোট চাওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট মার্কার পক্ষে। পোস্টার,ব্যানার এ ছেয়ে গেছে ভোলা জেলার বিভিন্ন শহরের অলি—গলি। বিভিন্ন হাট—বাজার, পাড়া—মহল্লা—চায়ের দোকানসহ সর্বত্রই আলোচনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে।
সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত ভোলা—১ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অত্যতম সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন এছাড়াও তিনি সাবেক মন্ত্রী বাংলাদেশের একজন বষীয়ান রাজনীতিবিদ। তিনি প্রতিদিন বিভিন্ন নির্বাচনী পথসভা ও উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে সাধারন ভোটারদের কাছে নৌকার মাকায় ভোট চান। একইসাথে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে ৭ই জানুয়ারী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ কে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তাই ভোটের সমীকরণে অন্য প্রার্থীদের তুলনায় হ্যাভিওয়েট প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি এই আসনে প্রচরাণা চালাচ্ছেন জাসদের মশাল প্রতীক নিয়ে ছিদ্দিকুর রহমান ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল নিয়ে মোঃ শাহাজাহান মিয়া। তারাও দিনরাত ভোটারদের কাছে ছুটছেন। তবে ভোটাররা বলছেন, যোগ্য প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন। যে উন্নয়ন করতে পারবে তাকেই তারা চান।
দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা নিয়ে গঠিত ভোলা—২ আসন। এখানে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন আলী আজম মুকুল। এছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেস’র ডাব নিয়ে মো. আসাদুজ্জামান, জাতীয় পার্টির জেপি’র বাইসাইকেল নিয়ে মো. গজনবী ও ফুলেরমালা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন’র শাহেনশাহ মো. সামসুদ্দিন মিয়া দিনভর গণ—সংযোগ, উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণসহ নানান প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোলা—৩ আসন লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনটিতে নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা। এখানে আওয়ামী লীগ সমর্থীত নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন যুব নেতা দ্বীপ বন্ধু নামে খ্যাত নূরুরন্নবী চৌধুরী শাওন। পাশাপাশি আরো রয়েছেন— ডাব প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেস’র মো. আলমগীর, জাতীয় পার্টির মো. কামাল উদ্দিন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র পার্থী সাবেক এমপি মো. জসিমউদ্দিন।
চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলা নিয়ে ভোলা—৪ আসন গঠিত। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। আরো রয়েছেন— স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আলাউদ্দিন, জাতীয় পার্টির মো. মিজানুর রহমান ও তৃণমূল বিএনপি’র মো. হানিফ। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রচারণায় সরগরম এই আসনটি মাঠঘাট।
জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালনে ১১জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন। একইসাথে চারজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’র নেতৃত্বাধীন একটি ইলেকশন ইনকোয়ারী টিম কাজ করছে। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোষ্টগার্ডসহ অনান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে নির্বাচনী প্রচারণা।
তিনি আরোও বলেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও অনেকটা শেষ পর্যায়। জেলায় প্রার্থীরা নির্বাচনের আচরণবিধি যেভাবে মেনে চলছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট। নির্বাচন পর্যন্ত যাতে এই ধারা অব্যাহত থাকে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
আপনার মতামত লিখুন
Array